- করোনা ডেস্ক: বৈশ্বিক মহামারী করোনা আতঙ্কের মাঝেও গত দুইমাসে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (১৫ মার্চ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত) প্রায় সতের হাজার রোগীকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। তারমধ্যে বহিঃবিভাগে প্রায় চৌদ্দ হাজার, জরুরী বিভাগে একহাজার ছয়শত এবং আন্তঃবিভাগে (ভর্তি রোগী) ৮০০ জন।
এছাড়া করোনা আক্রান্ত সনাক্তকরণে ২৫৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছে। রিপোর্ট পাওয়া গেছে ১৮০ জনের। যার মধ্যে ১৭৮ জনের রির্পোট নেগেটিভ এসেছে। পজেটিভ রোগী ২ জন তারমধ্যে ১ জন সুস্থ। বাকীদের রিপোর্ট এখনো অপেক্ষমান। তাছাড়া চৌদ্দগ্রামের স্থানীয় ২ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে, একজন ঢাকায় অপরজন ফেনীতে চিকিৎসা নিচ্ছে। এখন হোম কোয়ারেন্টিনে আছে ২৮ জন। অপরদিকে করোনা রোগিদের চিকিৎসার জন্য কালিকাপুর পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্র ১০ শয্যার হাসপাতালটিকে আইসোলেশন ওয়ার্ড হিসেবে তৈরি করে রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন ওয়ার্ডে কোন রোগী ভর্তি করতে হয়নি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারদের নেতৃত্বে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) মো. আনোয়ার হোসেন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো. হাবিবুর রহমান, স্থানীয় স্বাস্থ্য সহকারীদের নিয়ে নমুনা সংগ্রহ টিম কাজ করে যাচ্ছে। চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে বিভিন্ন এলাকায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়াও ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এবং উপজেলার ৪৪ টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ৩০ জন চিকিৎসক, ২০ জন নার্স, ৪৪ জন হেলথপ্রোফাইডর সহ স্বাস্থ্যকর্মীরা নিরলসভাবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহিঃবিভাগে আগত রোগিদের জন্য হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ। হাত ধুয়ে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে রোগিরা চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন। এছাড়া ফ্লু কর্ণার করে জ্বর, সর্দি-কাশি রোগীদের আলাদা চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাসিবুর রহমান জানান, “গত ৮ মার্চ দেশে করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ার পর থেকে সরকারি নির্দেশনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ রানাকে সভাপতি এবং আমাকে সদস্য সচিব হিসেবে উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে পৌরসভা ও ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে করোনা প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব কমিটির মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রচার প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে। করোনা সন্দেহে মৃত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ এবং দাফন কাজ আমরা উপস্থিত হয়ে করতেছি। প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সন্দেহজনক হলেই আমরা নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়ে দিতেছি। সরকারিভাবে দেওয়া পিপিই যথেষ্ট থাকলেও মাস্ক, হ্যান্ড গ্লোভস ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার নেই। আমরা সাধ্যানুযায়ী চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাবো।
জনগণকে সচেতন হয়ে ঘরে থাকার আহবান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ঘরে থাকুন নিরাপদ থাকুন, আশেপাশের কেউ বিদেশ বা অন্য জেলা থেকে আসলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বা আমাদেরকে জানান। মনে রাখবেন করোনা ভাইরাসের কোন প্রতিষেধক আবিস্কৃত হয়নি, তাই ঘরে থাকাই একমাত্র ওষুধ এবং নিরাপদ।”
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন