চৌদ্দগ্রামে সিআর মামলার ২ আসামি গ্রেপ্তার বৃত্তান্ত

স্টাফ রিপোর্টার: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সিআর-৭৬৩/১৯ (৩৩৭-ও/২,২৯/১১/১৯) নং মামলায় মো. জয়নাল (৫০) ও মো. সাইফুল ইসলাম (৩৫) নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা উভয়ই উপজেলার গুনবতী ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের মৃত মো. মফিজ মিয়ার ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শিক্ষানবিস সহকারী পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম মাসুদ।
জানা যায়, গত ২৯ নভেম্বর উপজেলার গুনবতী ইউনয়নের মফজলের রহমানের স্ত্রী সামছুন নাহার কুমিল্লার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিঃ ৫নং আমলী আদালতে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বাদীনি সামছুন নাহার একজন সহজ-সরল প্রকৃতির, নিরীহ ও আইন মান্যকারী লোক। মামলার বিবাদীদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বাদীনির জায়গা-সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। বাদীনির পুত্রদের বিদেশে চাকুরীরত অবস্থায় থাকার সুবাধে বিবাদীরা বেআইনীভাবে তার দখলী সম্পতি ও দোকান কোঠা থেকে বাদীনি ও তার ভাড়াটিয়াকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ ও দোকান কোঠা ভেঙ্গে বিবাদীরা বাদীনির দখলী সম্মত্তি ও দোকান কোঠা দখলে নেয়। তারই প্রেক্ষিতে বাদীনি গত ১৯ নভেম্বর সিনিয়র জজ আদালতে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মোকদ্দমা (মোকাদ্দমা নং ১৬১/১৯ইং) দায়ের করেন।
ঐ মোকাদ্দমার অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর আদেশ প্রচার করে। বিজ্ঞ আদালত হইতে কারণ দর্শানোর নোটিশ আদালতের জারীকারক কর্তৃক জারী করিতে গেলে বাদীনি আসামীগণের বাড়ি দেখাইয়া দিয়া ঘটনার দিন (২২ নভেম্বর) বাদীনির দোকানের সামনে গেলে বিবাদীগণ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দলবদ্ধ হয়ে বেআইনীভাবে বাদীনির উপর অতর্কিতভাবে আক্রমন করে। মারধরের এক পর্যায়ে বিবাদীরা লাঠি দিয়ে বাদীনির মাথায় আঘাত করলে বাদীনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এসময় তাকে লাঠিসোটা ও লোহার রড দিয়ে উপর্যুপরি মারধরের মাধ্যমে নীলা-ফুলা রক্তাক্ত জখম করা হয়। পরে বিবাদীরা তাকে শ্বাসরোধ করিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে বাদীনির বুকের উপর বসিয়া গলা চেপে ধরে এবং কাপড়-চোপড় টানা-হেছড়া করে শ্লীলতাহানি করে।
এসময় বাদীনির শোর-চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এসে তাকে নীলা-ফুলা রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে ভর্তি থেকে কয়েকদিন চিকিৎসা নিয়ে একটু সুস্থ হলে তাকে বাড়িতে নিয়ে যায় তার স্বজনরা।
এবিষয়ে বাদীনি সামছুন নাহার এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, ‘ভূমি দস্যু শিপন, জয়নাল, সাইফুল, জাহিদ ও বাদল আমাকে এখনো মোবাইলে কল করে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। আমার উপর হামলার ঘটনা সহ আমার দখলী সম্পত্তি জোর পূর্বক দখল ও দোকান কোঠা ভাঙ্গার বিচার চাই’।
এবিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শিক্ষানবিস সহকারী পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘সামছুন নাহার নামে এক নারীর মামলার প্রেক্ষিতে জয়নাল ও সাইফুল নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে। মামলার তদন্তের স্বার্থে এই মুহুর্তে এর বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না’।

0/কমেন্ট করুন